মঙ্গলবার, ০৩ Jun ২০২৫, ০৮:৪৪ পূর্বাহ্ন
আব্দুর রহমান ঈশান- নেত্রকোণা জেলা প্রতিনিধিঃ
নেত্রকোণা সদর উপজেলার কমলপুর গ্রামে বাসিন্দা আলতু মিয়ার ছেলে প্রেমিক আমিরুল ইসলাম(২৬) বিয়েতে রাজি না হওয়ায় জেলার বারহাট্টা উপজেলার সাহতা ইউনিয়নের সাহতা গ্রামের বাসিন্দা মোঃ আব্দুল লতিফের মেয়ে মর্জিনা আক্তার(১৮) নামের এক শিক্ষার্থী আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এবং এই ঘটনার কিছুদিন পর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।
বেশ কিছুদিন আগে উপজেলার সাহতা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। মর্জিনা আক্তার বারহাট্টা উপজেলার সাহতা গ্রামের আঃ লতিফের মেয়ে এবং সাহতা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলো বলে জানা গেছে।
জানা যায়- প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে প্রেমিক আমিরুল ইসলাম একাধিকবার ধর্ষণ করে মর্জিনা আক্তারকে। একসময় আমিরুলের পরিবার তাদের দুজনের বিয়ে দিবে বলেও মর্জিনা আক্তারের পরিবারকে কথা দেও ও বিয়ের জন্য তারা বিভিন্ন দাবিদাবা করে মর্জিনা আক্তারের পরিবারের সদস্যদের কাছে। কিন্তু পরে আমিরুল ইসলাম মর্জিনা আক্তারকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানালে মর্জিনা আক্তার গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে।
এসময় মর্জিনা আক্তারের পরিবার মর্জিনা আক্তারকে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করলে তখন হাসপাতালে কর্মরত ডাক্তার মর্জিনার অবস্থা দেখে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। সেখানে ও মর্জিনার অবস্থা বেশি ভালো না দেখে ডাক্তার তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায় সেখানে মর্জিনার কিছু দিন যাওয়ার পর সে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আসেন।
তার কিছু দিন পর ব্রেইন মনোরোগ সেক্সায়াল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাঃ পলাশ রায়কে দেখান, পরবর্তীতে মানসিক রোগ, খিঁচুনি রোগ, মাথা ব্যথা ও ঘুমের সমস্যা মেডিসিন অ্যজমা ও বক্ষ বিশেষজ্ঞ ডাঃ হেফজুর বারী খানের অধিনে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
আদালতের তথ্য বিবরণীতে জানা যায়, মর্জিনা আক্তারের ভাই মোঃ নূর নবী বাদী হয়ে আমিরুল ও আরোও কয়েকজনকে আসামি করে নেত্রকোনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন। এবং এই মামলায় বারহাট্টা থানা পুলিশ আসামি আমিরুল ইসলাম সহ আরও কয়েকজনকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণ করেন। আসামিরা কিছু দিন জেল খেটে জামিনের মাধ্যমে বেড়িয়ে আসে। এই ঘটনার বিচার চেয়ে মৃত মর্জিনার এখনো আইনের ধারে ধারে ঘুরছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তখনকার এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মোহাইমিনুল ইসলাম লিমন বলেন- আমি তদন্ত করে যা পেয়েছি সেই রিপোর্ট আদালতে পেশ করেছি। আমি নিজেও এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে রিপোর্ট আদালতে পেশ করেছি। আমি যতটুকু জানি আসামি আমিরুল ইসলামের সাথে মৃত মর্জিনা আক্তারের প্রেমের সম্পর্ক ছিল।এক পর্যায়ে আসামি আমিরুল ইসলাম মৃত মর্জিনাকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানালে মর্জিনা আক্তার গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করতে চেষ্টা করে। তিনি এই প্রতিনিধিকে এই ঘটনাটি সম্পর্কে আরোও আমি আমার সাধ্য মতো চেষ্টা করেছি এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করতে। এবং আমি আসামিদেরকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছি। আমি এখন এই থানায় নেই।
তখনকার এই থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ ওসি লুৎফুল হক বলেন- এই মামলার সুষ্ঠু তদন্ত করে রিপোর্ট আদালতে পেশ করা হয়েছিলো। মৃত মর্জিনা আক্তারের ভাই মোঃ নূর নবীর করা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলায় প্রেমিক আমিরুল ইসলাম সহ যতোজন আসামি ছিলো সবাইকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছিলো। এবং আদালতের মাধ্যমে সকল আসামী জামিনে আছেন